রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০১:৪০ এএম
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ’ সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শীর্ষক এ বাজেটের আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ‘সমৃদ্ধ আগামীর’ প্রত্যাশায় আসন্ন ২০১৯-’২০ অর্থবছরের বাজেট গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি দেশের ৪৮তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২০তম এবং বর্তমান অর্থমন্ত্রীর প্রথম বাজেট। এ ধরনের বড় বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং দক্ষতা উন্নয়ন একান্ত অপরিহার্য।
বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য হচ্ছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। নতুন বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা বেশি ধরা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে বিগত অর্থবছরের তুলনায় এত বড় রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশ। ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণ ৬৮ হাজার ১৬ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হবে। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে নেওয়া হবে ৩০ হাজার কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে সুদ-আসল পরিশোধ করতেই বিশাল ব্যয় হচ্ছে। উপরন্তু ঋণের পরিমাণ সুদসহ জমতে জমতে পাহাড়সম হলে পরিশোধের কোনো দিকনির্দেশনাও বাজেটগুলোতে থাকে না।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সুখবর রয়েছে নতুন বাজেটে। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। অর্থাৎ এক হাজার টাকা রেমিট্যান্স পাঠালে প্রবাসীরা প্রণোদনা হিসেবে পাবেন ২০ টাকা।
নতুন মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ বাস্তবায়ন একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসারে এই আইন সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তবে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও ভ্যাট রিটার্ন পদ্ধতি সহজীকরণ করা প্রয়োজন। বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়ন ও কর্পোরেট কর হার হ্রাস না করা হলে সরকারের প্রত্যাশিত বেসরকারি বিনিয়োগ ও উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ বাড়বে না। আর বিনিয়োগ না বাড়লে বাজেটে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা অর্জন কঠিন হয়ে পড়বে। এছাড়া নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য স্টার্ট আপ ফান্ড গঠন করার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাতে হয়।
মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন এবং মানব সম্পদ উন্নয়নে সময় ও যুগোপযোগী কর্মপন্থা নির্ধারণ করতে হবে। বাজেটে বলা হয়েছে, ৩ কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে ২০৩০ সালের মধ্যে। কিন্তু এটা কোন খাতে, কীভাবে সৃষ্টি হবে এবং এটা ব্যক্তিখাতে হবে নাকি সরকারি খাতে হবে, এটা কি গ্রামে হবে নাকি শহরে হবে, এ ধরনের কোনও মূল্যায়নভিত্তিক বা কোনও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনাভিত্তিক কৌশলপত্র লক্ষ্যনীয় নয়।
মনে রাখতে হবে, জিডিপির সাথে তাল রেখে সাধারণ মানুষের ইনকাম তেমন বাড়েনি। এ কারণে বেশি সংখ্যক মানুষ থেকে আয়কর পাওয়া সম্ভব নয়। সস্তা শ্রমের কারণে সাধারণের আর্থিক সামর্থও তেমন বারেনি। বরং বেশিরভাগ মানুষ উল্টো সারা বছর ঋণের উপোর থাকে। কর্পোরেট কোম্পানিগুলো বিশেষ মেকানিজম ব্যবহার করে বরাবরই করফাঁকি দিয়ে থাকে। ব্যাংক খালি করে এদেশে বিনিয়োগ না করে রাঘববোয়ালরা বিদেশে মুদ্রাপাচার করছেন, মোটের উপর জিডিপির ভাগ কোটিপতিদের পেটে, আর সরকারেরও এই ব্যাপারে বিশেষ নজরদারী যতেষ্ট নয়। সরকারকে শুধু জিডিপি নিয়েই মহা খুশি থেকে বহুবিধ শুভঙ্করের ফাঁকি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে, দেশে সামগ্রিকভাবে সুশাসন আসা করা যায় না।
আমাদের মোট দেশজ উৎপাদন ও ঋণের অনুপাত এখনো ভালো অবস্থানে আছে। কিন্তু রাজস্ব আয় লক্ষণীয়ভাবে বাড়াতে না পারলে এই ভালো অবস্থান বেশি দিন ধরে রাখা যাবে বলে মনে হয় না। সেই দুর্দিন যেন আমাদের কখনো না আসে। সাধারণ জনগণকে বড় ঋণখেলাপিদের জন্যও প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে। গত কয়েক বছরে সরকারি ব্যাংকের মূলধন সংকট মেটাতে প্রায় ১৫ হাজার কোটি কর থেকে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ জনগণ করের বোঝা বহন করে চললেও এর বিনিময়ে জনসেবা পাওয়ার চিত্র হতাশাজনক। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে গুণগত উন্নয়ন প্রশ্নের সম্মুখীন। এ ছাড়া নিরাপদ সুপেয় পানি, পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সুবিধাসহ অন্যান্য জনসেবামূলক কর্মকাণ্ড মন্থর গতিতে এগোচ্ছে।
সরকারি ব্যাংকগুলোতে পুনঃঅর্থায়নের জন্য প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ অর্থ বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হয়। ফলে রাজস্বখাত থেকে আহরিত অর্থ উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় করার ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে প্রতিবছর খেলাপি ঋণের কারণে ঋণে সুদের হার হ্রাস করা যাচ্ছে না। ফলে কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস বা ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংকিং কমিশন গঠন, মার্জার ও অ্যাকুইজিসন এর উদ্যোগকে স্বাগত জানাতে হয়। সেইসঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার প্রস্তাবও ভালো হয়েছে।
সরকারী খাতে যে দূর্নীতি হয় তা যদি রোধ করা যায় এবং রাজস্ব যদি যথার্থভাবে আদায় করা যায়, তাহলে বর্তমানে যে রাজস্ব আয় হয় তাই দিয়েই অনেক ভালোভাবে দেশ চলতে পারে। অযথা করের বোঝা বাড়িয়ে, বিদ্যুত, গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাধারণ জনগণকে বিপদে ফেলার প্রয়োজন নাই।
উন্নয়নের যে মহাসড়কে আমরা পা রেখেছি, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থের কারণে সেখান থেকে যেন আমরা ছিটকে না পড়ি, সেদিকে সবার, বিশেষ করে দেশচালকদের বিশেষ দৃষ্টি রাখতে হবে।
বাংলাদেশে শ্রমিক হিসেবে সবচেয়ে মজলুম গোষ্ঠী হল সাংবাদিকরা। তাদের কেবল বেতন সামান্য তাই নয় সাংবাদ... বিস্তারিত
আমরা এখন ২০২২ সালের সময়ের জীবন যাপন করছি। এমন সময়ে যদি শোনেন ভার্জিনিটি একটি পণ্য আপনার সামর্থ্য থ... বিস্তারিত
ইতিহাসে ভালোবাসার নানা গল্প। গল্প নিয়ে মহাকাণ্ড। কেউ বলেন ১৪ ফেব্রুয়ারি দিনে রোমান দেব-দেবীর রান... বিস্তারিত
ডিসকভারি চ্যানেলে বাঘ যখন তার হিংস্র থাবায় শিকারীকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে তাকে ভক্ষণ করে তখন আমরা শ... বিস্তারিত
১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর আম্রকাননে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য অস্তমিত হয়েছিল। মওলানা আবদুল হাম... বিস্তারিত
যৌবনের পুরো সময়টা কাটিয়েছিলেন প্রবাসে। সুখ নামক সোনার হরিণ ধরা হয়নি ওমানের তপ্ত রোধে ১৮ বছরের বেশ... বিস্তারিত
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য আলাদা কার্য... বিস্তারিত
এক বছর আগে ঘোষিত দরের চেয়ে ১-২ টাকা বেশি দামে রেমিট্যান্সের ডলার কেনায় ছয়টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্... বিস্তারিত
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জন... বিস্তারিত
চোখের ইশারায় খুলে যাবে অ্যাপ, আঙুলে ছুঁয়ে সরাতে হবে স্ক্রিন। মাথা নাড়ালেই হবে অনেক কাজ। প্রযু... বিস্তারিত